https://shikhabd.com/google0928d57da4654288.html
লোভাছড়া পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার দাবীতে কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে লোভাছড়া লোড-আনলোড শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি. নং:সিলেট-৮০ এর নেতৃবৃন্দ। গতকাল দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরীন এর হাতে স্মারকলিপি প্রদান করেন লাড-আনলোড শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ আখতার হোসেন।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন ১নং লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ডাঃ ফয়াজ উদ্দিন, ৪নং সাতবাক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তৈয়ইব শামিম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কানাইঘাট উপজেলার শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মাহবুবুর রহমান, ২নং লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামাল আহমদ, বিশিষ্ট সমাজসেবী নুর উদ্দিন (মড়া), সমাজসেবক শাহিদ আহমদ শাহীন, শ্রমিক নেতা হাবিব আহমদ, ইফতেখার আহমদ, লোভাছড়া লোড-আনলোড শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কামরুল আলমসহ সংগঠনের সকল নেতৃবৃন্দ।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, কানাইঘাট উপজেলার লোভাছড়া লোড-আনলোড শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিক সহ অন্যান্য পাথর শ্রমিকগণ সনাতন পদ্ধতিতে লোভাছড়া পাথর কোয়ারী হতে পাথর উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করেছে। বিগত কয়েক বছর যাবৎ পাথর, বালু উত্তোলন বন্ধ থাকায় কানাইঘাট উপজেলার প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক কর্মসংস্থান হারিয়ে অনাহারে অর্ধহারে জীবনযাপন করছে। কানাইঘাট উপজেলা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে আসা পাথরের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় ৫০ হাজারের অধিক শ্রমিক। বর্তমানে কর্মসংস্থান হারিয়ে শ্রমিকদের জীবিকা নির্বাহ করা অসহনীয় হয়ে পড়েছে। শ্রমিকদের অর্থনৈতিক অবস্থা দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। এলাকার জনগণের জীবিকা নির্বাহ করার একমাত্র মাধ্যম ছিল পাথর উত্তোল ও বহন করা, কিন্তু কোয়ারী বন্ধ থাকায় অভাবের তাড়নায় জীবনের ঝুকি নিয়ে এই জনপদের কিছু সংখ্যক নাগরিক ভারত থেকে আসা অবৈধ বিভিন্ন রকমারি মালামাল পরিবহন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। যাহা চুরা চালান কাজে সহায়তা হিসাবে অভিহিত, বেআইনী ও আইন বহির্ভূত।
পরিবেশের অজুহাতে উত্তোলনকৃত পাথর জব্দ করার কারণে ব্যবসায়ীরা পাথর বিক্রি করতে না পারায় শ্রমিকের মজুরি বাবদ পাওনা টাকা পরিশোধ করেননি। এখন পাথর বিক্রি হতে যাচ্ছে, আমাদের শ্রমিকের মজুরি বাবদ টাকা না পাওয়া পর্যন্ত পাথর স্থানান্তর হতে দিব না।
উল্লেখ্য, বিগত সরকারের আমলে সিলেটের সবকটি কোয়ারীর উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেশ ও জণগণের স্বার্থের বিরোদ্ধে গৃহিত প্রদক্ষেপ এখনো বহাল রয়েছে। অন্যদিকে ব্যবসায়িরা ব্যংকের ঋণের মূলধন ও মুনাফার বুঝা এবং শ্রমিকের পাওনা মজুরি আদায়ে বিপাকে পড়ে অনেক ব্যবসায়ী দেউলিয়া হয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। অপরদিকে প্রতি বছর উজান থেকে আসা পানির সাথে বালু ও পলির সমন্বয়ে গড়ে ওঠা চরাঞ্চলের মাধ্যমে সুরমা নদীর গভীরতা হ্রাস পাচ্ছে এরই সাথে লোভা নদীতে পাথর ও বালুর সমন্বয়ে জেগে ওঠা চরাঞ্চল দীর্ঘ হচ্ছে। এতে নদীর ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে পাহাড়ী ঢল নেমে নদীর তীর অতিক্রম করে জনপদে পানি ঢুকে এলাকাবাসী ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
এই জনপদের বাসিন্দাদের অর্থনৈতিক অসহায়ত্ব হতে উত্তোরণের জন্য জব্দ পাথরগুলো ব্যবসায়ীদের ফিরিয়ে দিয়ে রয়েলিটির মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আদায় হলে শ্রমিক ও মালিকের বিদ্যমান সংকটের অবসান হবে। লোভাছড়া পাথর কোয়ারী এলাকায় পাথর উত্তোলন ও কোয়ারীর ভাটি এলাকায় বালুর চরাঞ্চলে বালু উত্তোলন ইজারা ও খাস কালেকশনের মাধ্যমে করা হলে রাষ্ট্র ও অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে। অন্যদিকে শ্রমিকদের কর্মসংস্থান হবে।
হতদরিদ্র জনগোষ্টির জীবিকা নির্বাহে মানবিক ও অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করে লোভাছড়া পাথর কোয়ারী হতে সনাতন পদ্ধতিতে পরিবেশের মানদন্ড বজায় রেখে পাথর উত্তোলন করার সুযোগ করে দেয়ার জন্য নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতি জোর দাবী জানান শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
আপনার মতামত লিখুন :