https://shikhabd.com/google0928d57da4654288.html

সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি ও শ্রমআইন বাস্তবায়নের দাবিতে স’মিল শ্রমিক ফেডারেশনের সিলেট বিভাগীয় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত


Shikha BD প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪, ৪:৩২ অপরাহ্ন /
সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি ও শ্রমআইন বাস্তবায়নের দাবিতে স’মিল শ্রমিক ফেডারেশনের সিলেট বিভাগীয় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত

স’মিল সেক্টরে সরকার ঘোষিত নি¤œতম মজুরি বাস্তবায়ন, গণতান্ত্রিক শ্রমআইন ও শ্রমবিধি প্রণয়ন, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার প্রতিষ্ঠা, ৮ ঘন্টা কর্মদিবস, নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র প্রদানসহ শ্রমআইন বাস্তবায়ন এবং চাল, ডাল তেলসহ নিত্যপণ্যের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধি রোধ এবং স্বল্পমূল্যে স্বর্বাত্মক রেশনিং ব্যবস্থা চালুসহ বিভিন্ন দাবিতে বাংলাদেশ স’মিল শ্রমিক ফেডারেশনের সিলেট বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ২৭ ডিসেম্বর বিকেল ৩ টায় সিলেট কোর্ট পয়েন্টে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সমাবেশ সভাপতিত্ব করেন স’মিল শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি খলিলুর রহমান। সিলেট জেলা স’মিল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন স’মিল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস। এছাড়াও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ সিলেট জেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক রমজান আলী পটু, জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা কমিটির আহবায়ক শুভ আজাদ শান্ত, সিলেট জেলা স’মিল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আইয়ুবুর রহমান, সুনামগঞ্জ স’মিল শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন, শ্রীমঙ্গল উপজেলা স’মিল শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান, বড়লেখা স’মিল শ্রমিক সংঘ সহ-সাধারণ সম্পাদক সাহেদ মিয়া, ফেঞ্চগঞ্জ উপজেলা স’মিল শ্রমিক সংঘের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সিলেট সদর উপজেলা স’মিল শ্রমিক সংঘের সভাপতি ফজর আলী, নবীগঞ্জ স’মিল শ্রমিক সংঘের নেতা আহমেদ ঠাকুর প্রমূখ।
সমাবেশে কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তাহীনতা ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে অতীতের সরকারগুলোর ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের ব্যর্থতায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে বক্তারা বলেন চাঁদপুরে ৭ জন নৌযান শ্রমিককে গলাকেটে নৃশংশভাবে হত্যার করার দিনেই গত ২৩ ডিসেম্বর গাজীপুরে একটি বোতাম কারখানায় অগ্নিকান্ডে ৩ জন শ্রমিক নিহত এবং আরও অনেকে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু যন্ত্রণায় হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। এর আগেও অগ্নিদগ্ধ হয়ে, ভবন ধ্বসে, মালিকের মুনাফার লালসার শিকার হয়ে অগণিত শ্রমিকের প্রাণ হানির পর নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোন সরকারই কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। সমাবেশ থেকে ৭ জন নৌ-শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন আহুত কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে নিহত সকল শ্রমিককের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপুরণ এবং আহত শ্রমিকদের উন্নত চিকিৎসা উপযুক্ত ক্ষতিপুরণ প্রদানের দাবি জানান।
সমাবেশ বক্তারা আরও বলেন বর্তমান দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতির বাজারে স’মিল শ্রমিকরা দিশেহারা। চাল, ডাল, তেল, লবন, চিনি, পিয়াজ, শাক-সবজি, মাছ-মাংস, দুধ-ডিম, ঔষুধপত্রসহ নিত্যপণ্যে লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি দফায় দফায় তেল, গ্যাস, বাড়িভাড়া-গাড়িভাড়া বৃদ্ধির কারণে শ্রমিকদের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রেই লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধি ঘটলেও শ্রমিক-কৃষক-জনগণের আয় বাড়েনি। এমন কি দুই বছরের বেশি সময় আগে স’মিল সেক্টরে সরকার নি¤œতম মজুরি ঘোষণা করলেও এখনও পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। তদুপরি প্রতিনিয়ত স’মিল শ্রমিকদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। মালিকপক্ষ শ্রমিকদের জন্য কর্মক্ষেত্রে ন্যূনতম নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় স’মিলে কর্মরত শ্রমিকদের শতকরা ৬০ ভাগ দূর্ঘটনার শিকার হয়ে থাকেন। এতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অঙ্গহানি হয়, কোন কোন ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। কাজ করতে যেয়ে এ সমস্ত দূর্ঘটনার শিকার শ্রমিকের উপযুক্ত চিকিৎসা যেমন মালিক করে না, তেমননি অঙ্গহানি ও মৃত্যুর জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপুরণও মূলত দেওয়া হয় না। স’মিলের মালিকরা শ্রমআইন, রাষ্ট্রীয় আইনের তোয়াক্কা করেন না। শ্রমআইন অনুযায়ী নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিসবুক প্রদান, দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজ, অতিরিক্ত কাজের দ্বিগুণ মজুরি, মজুরিসহ সাপ্তাহিক ছুটি, নৈমিত্তিক ছুটি, চিকিৎসা ছুটি, উৎসব ছুটি, অর্জিত ছুটি ইত্যাদির প্রদানের বিধান থাকলেও তা প্রদান করা হয় না। যার কারণে স’মিল শ্রমিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ পুঞ্জিভ‚ত হচ্ছে।
সমাবেশ থেকে স’মিল সেক্টরে সরকার ঘোষিত নি¤œতম মজুরি বাস্তবায়ন, গণতান্ত্রিক শ্রমআইন ও শ্রমবিধি প্রণয়ন, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার প্রতিষ্ঠা, ৮ ঘন্টা কর্মদিবস, নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র প্রদানসহ শ্রমআইন কার্যকর এবং চাল, ডাল তেলসহ নিত্যপণ্যের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধি রোধ এবং স্বল্পমূল্যে স্বর্বাত্মক রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবিতে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।
সমাবেশে শেষে একটি লাল পতাকার বিক্ষোভ মিছিল কোর্ট পয়েন্ট, জিন্দাবাজার হয়ে ক্বীন ব্রিজের সামনে এসে সমাপ্ত হয়।