https://shikhabd.com/google0928d57da4654288.html
উলামা-মাশায়েখদের প্রতি তাবলীগের বিষয়ে ঐক্যের উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন মাওলানা সৈয়দ আনোয়ার আব্দুল্লাহ।
সাধারণ মুসল্লী ও তাবলীগের সাথীদের পক্ষে মাওলানা সৈয়দ আনোয়ার আব্দুল্লাহ এক বার্তায় উলামা-মাশায়েখদের প্রতি বলেন, আপনারা বাঙালি জাতির বিপ্লবী রাহবার। নিশ্চয় আল্লাহপাক আপনাদেরকে ইলমের সাথে হিলমের প্রাচুর্য দ্বারা সুশোভিত করেছেন। আর আপনাদের ইলমে ওহির অনন্য সৌন্দর্য এটিও যে, যারা আপনাদেরকে বোঝে, আপনারা তাদেরকে ভালোবাসেন এবং যারা ভুলবশত বা কোনো কারণে বোঝে না, ওরাসাতে নবুওয়াতের দায়িত্ববোধ থেকে তাদেরকেও বরদাশত করেন এবং উত্তম পন্থায় সংশোধনের পথ অবলম্বন করেন।আমরা সাধারণ মুসল্লী ও তাবলীগের সাথীবৃন্দের পক্ষ থেকে সর্বপ্রথম আপনাদের সুচিন্তিত পদক্ষেপগুলোর জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনাদের অসামান্য ভুমিকায় দেশ ও জাতি নতুনভাবে মুক্ত হয়েছে। যার ফলে উম্মাহের মধ্যে ফের ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব বন্ধনের বিপুল সম্ভবনা সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আপনারা উম্মাহের বৃহত্তর স্বার্থে সেই ঐক্যের সম্ভবনাকে বাস্তবে রূপদানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আমরা সর্বান্তকরণে আপনাদের এই ঐক্য প্রচেষ্টার সফলতা কামনা করি। এরই সাথে আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আপনাদের এই ঐক্য প্রচেষ্টার মহোতী উদ্যোগে আমরা আপনাদের সহযাত্রী আছি। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, যখনই উলামায়কেরাম ঐক্য তৈরির পথে এগিয়েছেন, তখনই এ প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করার লক্ষ্যে ধর্মীয় বেশে কুচক্রী মহল হেন চেষ্টা নেই- যা তারা করেনি । এর জ্বলন্ত উদাহরণ হচ্ছে ‘বালাকোট, রেশমী রুমাল আন্দোলন’। আজও একটা মহল কিছু সরলমনা উলামায়কেরামকে প্রভাবিত করে শাখাগত ছোট ছোট বিষয়গুলো উষ্কে দিয়ে আমাদের ঐক্যের সেই সোনালি সম্ভাবনাকে বানচাল করে দেয়ার পায়তারা করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের বলতে দ্বিধা নেই যে, আগামী ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উলামা মাশায়েখদের ব্যানারে যে সমাবেশের ডাক দেয়া হয়েছে, এটা আমাদের (তাবলীগের ময়দানে) পারস্পরিক কোন্দলকে নতুনভাবে উষ্কে দিবে। মসজিদে মসজিদ, পাড়ায়, মহল্লায় সংঘাতের দাবানল ছড়িয়ে দিবে। তাই, দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে উলামায়কেরামের প্রতি আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি, তাবলীগের বিষয়টিকে রাজপথে না নিয়ে আপনারা ঘরোয়াভাবে সমাধানের চেষ্টা করুন। মাওলানা আরশাদ মাদানী ও মুফতী ত্বকী উসমানী (দা. বা.)-এর রাহবারি অনুযায়ী একপক্ষকে হক ও অপর পক্ষকে বাতিল না বলে তাদের জন্য সমানভাবে মেহনতের ক্ষেত্র তৈরি করে দিন। আল্লাহপাকের ঘোষণা অনুযায়ী -‘সমঝোতাই উত্তম’। এর উপর ভিত্তি করে আপনারা উভয় পক্ষকে নিয়ে খোলামেলা বসুন। আমরা প্রত্যয় নিয়ে বলছি যে, নিজামুদ্দীনের প্রত্যেক অনুসারী আপনাদের এ পদক্ষেপ সাদরে গ্রহণ করবেন এবং আপনাদের যেকোনো যৌক্তিক পরামর্শকে তারা গণীমত হিসেবে মেনে নেবেন । আর আপনাদের এ উদ্যোগ বিশ্ব দরবারে ঐক্যের একটি জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে থাকবে ইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহপাকের দরবারেও আপনারা অনন্তকাল এর প্রতিদান পেয়ে যাবেন। পক্ষান্তরে বিষয়টা অযথা রাজপথে গড়ালে এতে কারো জন্যই মংগল বয়ে আনবে না বলে আমরা মনে করছি । তাছাড়া বাংলাদেশে নিজামুদ্দীনের অনুসারীগণও এতেটা দুর্বল বা অসহায় নন যে, একটা সমাবেশ দিয়ে তাদেরকে এবং তাদের কার্যক্রমকে মুছে ফেলা যাবে। বরং আমরা বিশ্বাস করি যে, এতে তারা আরো সুসংহত ও সুদৃঢ় হবে ।
তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করে বলেন, আপনারা ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কর্মসূচি পালন করবেন না। আর যদি করেনও, তাহলে তাবলীগ ইস্যুটাকে পরিহার করবেন। অথবা তাবলীগের উভয় পক্ষের স্বার্থ নিয়ে কথা বলবেন।
আপনার মতামত লিখুন :